ইমদাদুল হক,পাইকগাছাঃ
কপোতাক্ষ নদের ভয়াবহ ভাঙ্গনে পাইকগাছার হিতামপুর মালোপাড়ার ঘরবাড়ী, গাছপালা ও জমি নদগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। শনিবার দুপুরে নদের বেড়ীবাধ ভেঙ্গে প্রায় অর্ধশত ঘর বাড়ি, ফসলের ক্ষেত ও পুকুর তলিয়ে যায়।
কপোতাক্ষ নদের ভয়াবহ ভাঙ্গন এলাকা ও প্লাবিত মালোপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল-আমিন পরিদর্শন করেছেন। এ সময় পাইকগাছা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শিয়াব উদ্দীন বুলু, গদাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জিয়াদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল-আমিন বলেন, ভাঙ্গন এলাকায় কাজের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে। আপদকালীন জরুরি ব্যবস্থা হিসাবে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে নদের ভাঙ্গন রোধ করতে বাশ, বালি, বস্তাসহ প্রয়োজনিয় জিনিসপত্র দিয়ে রাতের জোয়ারের আগে প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। নদের তীব্র স্রোতের টানে ভয়াবহ ভাঙ্গনের কবলে পড়ে মালোপাড়া এলাকার মানুষ চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছে। ভাঙ্গন এলাকার কিছু কিছু ঘরে নিচের অর্ধেক মাটি নদে ধ্বসে পড়েছে। ঘরগুলি নদের উপর ঝুলছে। যে কোন সময় নদ গর্ভে ভেঙ্গে পড়তে পারে। এসব পরিবারের বসবাসরত মানুষগুলো নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। অতিসত্বর ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে রাস্তাসহ বাকী পরিবারের ঘরবাড়ী এবং ফসলী জমি নদেগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
মালোপাড়া গিয়ে দেখা যায়, একটি মন্দির ও প্রায় ৫০টি পরিবার ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে। বিগত কয়েক বছর ভাঙ্গনের তীব্রতা না থাকলেও গত বছর থেকে ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে। ভাঙ্গন কবলিত মালোপাড়ার রঞ্জিত বিশ্বাস, নিমাই বিশ্বাস, প্রভাষ বিশ্বাস, রবিন বিশ্বাস, সুভাষ বিশ্বাস, সাধন বিশ্বাস, বাসুদেব বিশ্বাস, লালু বিশ্বাস, নলিনা বিশ্বাস, ভাদু বিশ্বাস, বিরেন্দ্র বিশ্বাস, সুরঞ্জন বিশ্বাস, সুশান্ত বিশ্বাস বিশ্বাসদের পরিবার গুলি চরম আতঙ্কে রয়েছে। জোয়ারের পানি বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করছে। আর ভাটার টানে নদের তীর ভেঙ্গে ভাঙ্গনের তীব্রতা বাড়ছে।
এ ব্যাপারে বোয়ালিয়া মালোপাড়ার দূর্গা মন্দির কমিটির সভাপতি লালু বিশ্বাস জানান, বিগত কয়েক বছর নদের টুকিটাকি ভাঙ্গন ছিল। তবে গত বছর থেকে ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে। অতি সত্বর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে আমাদের মন্দির, বাড়ী ঘর নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে।
তাছাড়া কপোতাক্ষ তীরবর্তী রাড়ুলী মালোপাড়া, স্টিমার ঘাট, আগড়ঘাটা, সোনাতনকাটি, কপিলমুনি, কাশিমনগরসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ভাঙন চলমান রয়েছে। ভাঙন ও ফাটল শুরু হওয়ায় বসতবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনার পাশাপাশি সর্বস্ব হারানোর শঙ্কা নিয়ে দিন কাটছে তীরবাসীর। এতে যেকোনো সময় বেড়িবাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। বেড়িবাঁধ ভাঙলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হবে।বোয়ালিয়া মালোপাড়ার ভাঙ্গন এলাকায় গত বছর কিছু অংশে বালির বস্তা দেওয়া হয়েছে। ভাঙ্গনে বালির বস্তাগুলি নদে ধসে পড়েছে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড পাইকগাছার সাব-এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার রাজু হাওলাদার বলেন, ভাঙ্গন রোধ করতে আমরা বালির বস্তা দিয়েছে। হিতামপুর মালোপাড়ার কপোতাক্ষ নদের ভাঙ্গন এলাকার কাজ শুরু হবে। ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করবে।